জাতি-রাজনীতি, জাতপাত ও দলিত প্রতর্ক পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষাপটে তপশিলি জাতির অবস্থান
রুপ কুমার বর্মনভৌগলিক ও সাংস্কৃতিক বহুত্বের সমন্বয়ে গঠিত ভারতীয় সমাজের বর্ণভিত্তিক দ্বন্দ্বমূলক অবস্থান', বিভেদ (difference), সংঘাত, প্রতিবাদ এবং প্রতিঘাতের আলোচনাগুলি সাম্প্রতিককালে সমাজ বিজ্ঞান, রাজনীতি, দর্শনচিন্তা এমনকি মানুষের দৈনন্দিন চিন্তাভাবনাতেও যথেষ্ঠ প্রভাব ফেলেছে। বর্তমানে এমন অনেক বহুল চর্চিত বিষয়গুলির মধ্যে অন্যতম হল 'জাতপাতের প্রসঙ্গ'। গণমাধ্যমের দৌলতে অতি ক্ষুদ্র অঞ্চলের ‘জাতপাত' ভারত তথা পৃথিবীতে ক্রমাগত তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে চলেছে যাকে অনেক সময়ই রাজনীতির রঙ রঙিন করে তুলছে। সাম্প্রতিককালে হায়দ্রাবাদ কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে দলিত ছাত্র নিগ্রহ (২০১৬), গুজরাটের গোরক্ষক বাহিনীর হাতে দলিত নিগ্রহ (২০১৬) বা হরিয়ানার মিরপুরের দলিতদের পুড়িয়ে মারার মতো নৃশংস ঘটনাগুলি (২০১০) ক্রমশ মুখরোচক আলোচনার গণ্ডী অতিক্রম করে বর্ণভিত্তিক প্রতিবাদ ও প্রতিঘাতের বাতাবরণ সৃষ্টি করছে। কিন্তু সমস্যা হল জাত্যাভিমানের বহিঃপ্রকাশ হিসাবে জাতপাতের ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরই কেবল ভারতীয় সমাজের তথাকথিত বিদ্বজনেরা বর্ণগত-হিংসার আলোচনা-সমালোচনায়মনোনিবেশ করেন। তাঁরা কখনই সমস্যাগুলোর উৎসকে নির্মূল করার ভাবনাকেঅগ্রাধিকার দেন না। ফলে বর্ণগত সংঘাত ও জাতপাতের অবিচার ( injustice )ভারতীয় সমাজে নিরবচ্ছিন্নভাবে বয়েই চলেছে। তাই বর্ণগত অবিচারের উৎস সন্ধান,তার বিবর্তন ও বর্তমানে তার প্রকৃতি সম্পর্কে অনুসন্ধান করা একান্তভাবে প্রয়োজন।